ক্যান্সার কি :-

অনিয়মিত কোষ বিভাজন সংক্রান্ত রোগ সমূহকে ক্যান্সার বলে। এটি মানবদেহের সবথেকে জটিল একটি রোগ যার নির্ণয় করা অনেক কঠিন কাজ। এর ফলে রোগীর শেষ সময়ে রোগটি ধরা পড়ে। এজন্যই পৃথিবীতে সব থেকে বেশি ক্যান্সার মৃত্যুহার। বাংলাদেশ  ২০ লক্ষ ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী রয়েছে। প্রতিবছর আনুমানিক দুই লক্ষ মানুষ ক্যান্সার আক্রান্ত হচ্ছে।প্রতিবছর এক লক্ষ ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী মারা যাচ্ছে। সেখানে প্রতিদিন গড় অনুমানিক ২৭৩ জন মানুষ হয়ে থাকে। 

 (ডেইলি স্টার ১০ জানুয়ারি ২০২২) 


CANCER PATIENT 2024


ক্যান্সার রোগ কত প্রকার :-

২০০ প্রকারের বেশি ক্যান্সার রয়েছে। তবে এর ভেতর অন্যতম স্তন ক্যান্সার ব্লাড ক্যান্সার। এর বাইরে আরো উপরে ক্যান্সার রোগ রয়েছে তবে আমরা সাধারণত এই সকল নামে শুনে থাকি। দেহের প্রত্যেকটা অংশের শ্রেণী ভাগের ক্যান্সা রোগ বৃদ্ধমান রয়েছে। মস্তিষ্ক স্নায়ু,চোখ, স্তন, মাথা, এইচআইভি, রক্ত সংক্রান্ত,পিত্তাশয়ের ক্যান্সার, পেনাইল ক্যান্সার, মুখে ক্যান্সার,  মেলানোমা (ত্বকের সবচাইতে প্রচলিত ক্যান্সার)  শ্বাসতন্ত্র, পেশি,যৌন সংক্রান্ত  ইত্যাদি। 


সব থেকে খারাপ ক্যান্সার কোনটি :-


ফুসফুস ক্যান্সার মানুষের ক্যান্সার রোগ হয়ে মৃত্যুর প্রথম তালিকায় বিদ্যমান হয়। মহিলাদের মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ হয়ে থাকে। ফুসফুস ক্যান্সারের কারণে প্রতি বছর বিশ্বে 13 লক্ষ লোক মারা যান। ফুসফুসের ক্যান্সারের সাধারণ লক্ষণ শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া রক্তসহ কাশি ওজন হ্রাস প্রধান লক্ষণ হয়ে থাকে। 


দীর্ঘমেয়াদী তামাক সেবনের ফলে ক্যান্সার হয়ে থাকে। ধূমপান ছাড়াও বাকি কিছু কারণেও এই হয়ে থাকে। বুকের এক্সরে পরীক্ষা এবং তমোগ্রাফির মাধ্যমে বস্তুর ক্যান্সার ধরা যেতে পারে। সার্জারি থেরাপি রেডিও থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ৫ থেকে ৮ বছর চিকিৎসা গ্রহণ করার পরে হার শুধুমাত্র ১৪ শতাংশই হয়। যা সামান্য বলা বাহুল্য। 


ক্যান্সার কিভাবে ছড়ায় :-


ক্যান্সার কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়। অসুস্থ ব্যক্তির থেকে এই রোগটি সুস্থ ব্যক্তিকে আক্রান্ত করতে পারে না। ইতিপূর্বে এমন কোন তথ্য বা রিপোর্ট কোন মেডিকেল থেকে দেওয়া হয়নি যে কোন শারীরিক স্পর্শ খাবার  ব্যবহার, পোশাক ব্যবহার ফলে, একসাথে বসবাস করলে,একই অক্সিজেন মাস্ক ব্যবহার করলে।

মোট কথায় ক্যান্সার কোন আছে রোগ নয়। 


কি খেলে ক্যান্সার হয় :-


অস্বাস্থ্যকর খাবারের ফলে বেশি সময় এই রোগ গুলি দেখা দিয়ে থাকে যেমন


কৃত্রিম চিনি :- ১৯৩১ সালে আবিষ্কার করেছিলেন টিউমার ক্যান্সার কোষ  বেড়ে উঠতে চিনির অবদান অনেক বেশি হয়ে থাকে। 

কৃত্রিম প্রক্রিয়া জাতকরণ খাবার থেকে। 


মাংস :-  যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ হাওয়াইয়ের গবেষণা অনুযায়ী, প্রক্রিয়াজাতকরণ মাংস অগ্নাশয় ক্যান্সারে ঝুঁকি বাড়ায় ৭০ শতাংশ। এতে উচ্চমাত্রায় রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয় শরীরের জন্য ক্ষতিকারক, এই খাবার প্রস্তুত করতে টার অথবা ধোয়া ব্যবহার করা হয়। যা বিষক্রিয়ার মাধ্যমে আমাদের দেহের  কোষ নষ্ট করে দেয়। 


মাছ :- বাণিজ্যিকভাবে আমাদের দেশে অথবা বিশ্বে মানুষের চাহিদার চেয়েও বেশি মাছ উৎপাদন  করা হয়।এই সকল উৎপাদিত মাছে প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক ঔষধ ও খাবার প্রয়োগ করা হয়। এর ফলে মাছগুলি দ্রুত ওজন বৃদ্ধি এবং বড় হয়। 


তেল:- গবেষণায় প্রমাণ করেছে যে, বাণিজ্যিকভাবে প্রকিয়া করা খাবারে থাকা উচ্চমাত্রার তেল ক্যান্সারের বৃদ্ধি। স্কিন ক্যান্সার কারণসমূহ শুধুমাত্র ভেজাল সেবনের ফলে হয়ে থাকে। 


সাদা আটা:- আমরা আমাদের ছোটবেলায় সব থেকে বেশি পরিমাণে লালাটা দেখেছি। এটির কারণ কি? 

এটি একটি অপরিশোধিত সঠিক গম থেকে প্রদত্ত আটা। যেখানে কোনরূপ কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়নি। কিন্তু বাজারে আজকাল আমরা সাদা আটা দেখে থাকি এটিতে প্রচুর পরিমাণে ক্লোরিন গ্যাস ব্যবহার করা হয়। আটাকে চকচক করতেও রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে যা আমাদের শরীরে ভীষণভাবে ক্ষতি হচ্ছে প্রতিনিয়ত।


ব্লাড ক্যান্সার কিভাবে হয় :- 


ব্লাড ক্যান্সার লোহিত কণিকা থেকে হয়ে থাকে এই রোগটির কোন বয়স নির্ভর রোগ নয় দেখা দিতে পারে। প্রখ্যাত রক্ত রোগের বিশেষজ্ঞ ডক্টর মহিন উদ্দিন আহমেদ খান বলেন ব্লাড ক্যান্সার কেন হয় তা সুনির্দিষ্ট কোন কারণ নেই তবে কিছু কিছু বিষয় ব্লাড ক্যান্সারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে থাকে যেমন ভেজাল খাদ্য গ্রহণ কীটনাশক ব্যবহার থেরাপি ব্যবহারে। আমরা বলতে পারি ডাউন সিনড্রোম যাদের হয় তাদের এ ব্লাড ক্যান্সার রোগ হওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি। 


ডাউন সিনড্রোম কি:- ডাউন সিনড্রোম সংক্ষেপে DS/DNS, তাইসোমিও একুশ নামে পরিচিত এই রূপটি। এটি একটি জেনেটিক রোগ ক্রোমোজোমের একটি অতিরিক্ত ক্রোমোজোম বিদ্যমান থাকে। অস্বাভাবিক শিশু যেমন স্বল্পবুদ্ধি শিশুদের এই রোগটি হয়ে থাকে। 


ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ :-

 

১.রক্তস্বল্পতা খাবারের অরুচি পায়ে পানি জমা 

২.দীর্ঘমেয়াদি জ্বর 

৩. অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ 

৪. শরীর ও হারে ব্যথা হওয়া 

৫.শরীর দুর্বল হওয়া 

৬. তোকে ছোট ছোট দাগ হওয়া 


ব্লাড ক্যান্সার কিভাবে চিকিৎসা করা হয় :-


কোমোথেরাপি 

জৈবিক থেরাপি 

বিকিরণ থেরাপি 


ব্লাড ক্যান্সার হলে বেঁচে থাকার হার কত :-


এ রোগটি নির্ণয় হবার পরবর্তীতে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর এর কম এ  ৯০% মানুষ মারা যায়।

তবে এই রোগ থেকে নিরাময় হওয়া অনেক টাই কঠিন। 

এই রোগ টি হলে মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া সম্ভাবনায় ৯০%। 


বাংলাদেশে ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা খরচ কত :-


আমাদের দেশে ক্যান্সার চিকিৎসা করতে হলে অবশ্যই ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। তবে এটি রোগের ভিন্নতার ওপর  নির্ভর করে। তবে এর থেকেওখরচ কম হতে পারে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত অথবা উন্নত শীল দেশে খরচ।