কেমোথেরাপি হচ্ছে একটি চিকিৎসার ব্যবস্থা যেখানে ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যার দ্বারা মানুষের ক্যান্সার নির্মূল করাও সম্ভব। ক্যান্সার মানুষ সাধারণত তিনটি ঔষধ দাঁড়ায় নির্মূল সম্ভব কেমোথেরাপি দ্বিতীয় ঔষধ আর একটা হচ্ছে রেডিও থেরাপি।
কেমোথেরাপি খরচ কত বাংলাদেশে:-
সরকারি হাসপাতালে কেমোথেরাপি খরচ ২০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা।বে সরকারি হলে এর পরি আর বৃদ্ধি হতে পারে ২লক্ষ্য থেকে ৫ লক্ষ্য টাকা।
কেমোথেরাপীর ঔষধ কি কি?
সাইটোটক্সিক নামক কিছু বিষাক্ত ঔষধ ব্যবহার করে থাকে কেমোথেরাপি চিকিৎসা প্রদানে।এর সাথে আরো ৫০টি ও বেশি ঔষধ ব্যবহার করা হয়। এই ঔষধ গুলো খুবই ক্ষতিকারক শরীরের পক্ষে এরপরেও সুস্থতার জন্য আমরা এই চিকিৎসা নিয়ে থাকি।
কেমোথেরাপি কাজ করছে কি কি লক্ষণ দেখতে পাবো:
কেমোথেরাপি হলো একটি চিকিৎসামূলক পদ্ধতি যা ক্যান্সার এবং অন্যান্য মহান্তকারক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এটি প্রধানতঃ ক্যান্সার সেলগুলি ধ্বংস করার জন্য ব্যবহৃত হয়। কেমোথেরাপি দ্বারা ক্যান্সার সেলগুলি ধ্বংস করা হয় এবং এটি অন্যান্য স্বাস্থ্যসম্মত সেলগুলির ক্ষতি করতে পারে যা ক্যান্সার সেলগুলি থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে। কেমোথেরাপি দেওয়ার সময় ক্যান্সার প্রকাশের ধরণ, স্থান এবং শ্রেণীবিন্যাস উপর নির্ভর করে। কিছু সাধারণ লক্ষণ হতে পারে যেমন মাথায় ব্যথা, বমি, ক্ষুধার্ত লাগা, ক্ষুধার্ত হওয়া, শরীরের শক্তি কমতে থাকা ইত্যাদি।
কেমোথেরাপি দিতে কত সময় লাগে:
কেমোথেরাপির সময় প্রচুর ভেরিয়েশন রয়েছে, এটি ক্যান্সারের প্রকাশের ধরণ, অবস্থা এবং ব্যক্তির প্রাকৃতিক অবস্থার উপর নির্ভর করে। কিছু মামলায় কেমোথেরাপি কিছু সপ্তাহ বা মাস পর্যন্ত চলতে পারে, যেমন লিউকেমিয়া এবং কিছু অন্যান্য ক্যান্সারের মামলায়। কিছু ক্যান্সারের ক্ষেত্রে কেমোথেরাপি বছর পর্যন্ত চলতে পারে।
একজন মানুষ কতবার কেমোথেরাপি নিতে পারে :
কেমোথেরাপি চক্র বিশেষ একটি চিকিৎসা যেখানে রোগীকে সুস্থ হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসা প্রদান করে থাকে। কেমোথেরাপি সাধারণত ৬ মাস থেকে থেকে ১ বছর পর্যন্ত চিকিৎসা প্রদান করে।
কেমোথেরাপি দেওয়ার পর রোগীর কি সমস্যা হতে পারে?
◑খিদে না লাগা
◑ওজন কমে যাওয়া
◑খিটখিটে মেজাজ হবে
◑গলায় ব্যথা করবে
◑ডায়রিয়া হবে
◑মানসিক ভারসাম্য হারাতে পারে।
কেমোথেরাপি কতদিন পর পর দিতে হয় :
কেমোথেরাপি সাধারণত ১৫ দিন পর পর দেওয়া হয়। আবার কিছু দেওয়া হয় এক মাস পর পরে। কেমোথেরাপি কতদিন পর পর দিতে হবে নির্ভর করে রোগীর ক্যান্সারের লক্ষণের উপর।
কেমোথেরাপি রাউন্ড কি:
একটি চক্র হল কেমোথেরাপি চিকিৎসা একটি সময়কাল যার পরে বিশ্রামের সময়কাল । উদাহরণস্বরূপ, আপনি ১ম সপ্তাহের জন্য প্রতিদিন কেমোথেরাপি পেতে পারেন এবং তারপরে ৩ সপ্তাহ কোন কেমোথেরাপি ছাড়াই চলতে পারবেন । এই ৪ সপ্তাহ একটি চক্র তৈরি করে। বিশ্রামের সময় আপনার শরীরকে পুনরুদ্ধার এবং নতুন সুস্থ কোষ তৈরি করার সুযোগ দেয়।যা ক্যান্সার রোগের প্রতিরোধ হিসেবে শরীরকে তৈরি করে।
কেমোথেরাপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কতদিন পরে শুরু হয়:
কেমোথেরাপি দেওয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শুরু হয় এবং এটি প্রথম রাউন্ডের পর থেকেই দেখা যায়। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে কিছু ঘন্টা থেকে কিছু দিনের মধ্যে পর্যন্ত চলতে পারে। এটি আপনার পরিবর্তনশীল হতে পারে এবং ক্যান্সারের প্রকাশের ধরণ, অবস্থা এবং কেমোথেরাপির প্রকারের উপর নির্ভর করে।
কেমোথেরাপির সবচেয়ে গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কি:
কেমোথেরাপির সবচেয়ে গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলো নিউট্রোপেনিয়া, যা হলো রক্তে সাধারণত প্রকাশ হওয়া পরিমাণের নিউট্রোফিল কমে যাওয়ার অবস্থা। এটি ক্যান্সার রোগীদের জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, কারণ এটি তাদের সংক্রামণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এটি সাধারণত কয়েক সপ্তাহ বা মাসের মধ্যে হয়ে যায় এবং কেমোথেরাপি শেষে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমাপ্ত হয়। নিউট্রোপেনিয়ার মাধ্যমে সাধারণত শরীরের সংক্রমণের ঝুঁকি কমানো হয়, যা ক্যান্সার রোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপির মধ্যে পার্থক্য কি
উত্তর: রেডিয়েশন থেরাপি এবং কেমোথেরাপি উভয় ধরনের ক্যান্সারের চিকিৎসা। কেমোথেরাপি ওষুধ ব্যবহার করে যা ক্রমবর্ধমান ক্যান্সার কোষকে মেরে ফেলা বা সঙ্কুচিত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। রেডিয়েশন থেরাপি উচ্চ শক্তির রশ্মি ব্যবহার করে ক্যান্সার কোষকে হত্যা করে, উদাহরণস্বরূপ, এক্স-রে বা প্রোটন।
কেমোথেরাপি কখন দিবেন না:-
কেমোথেরাপির সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে, এটি সবসময় সুপারিশ করা হয় না। আপনার শরীর কেমোথেরাপি সহ্য করার জন্য যথেষ্ট সুস্থ না হলে বা আরও কার্যকরী চিকিৎসা পাওয়া গেলে আপনার অনকোলজিস্ট কেমোথেরাপি এড়ানোর পরামর্শ দিতে পারেন।
কেমোথেরাপি পরবর্তী খাবার:
কেমোথেরাপি গ্রহণ করার পরে শরীরের তরল পদার্থের অভাব দেখা দিতে পারে এর ফলে আপনাকে প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাদ্য পানি,ডাব,তরমুজ, ফলমূল শাকসবজি বেশি পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে। এর সাথে ডিহাইডারেশন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় এজন্য প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
কেমোথেরাপি কত প্রকার হয়ে থাকে:
চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুসারে কোমথেরাপি কে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়।
১. আন্টিটিউমার এন্টিবায়োটিক
২. আন্টিমেটাবোলাইটস
৩. অ্যালকালেনটিং ও
৪. উদ্ভিদ অ্যালকালয়েড।
কেমোথেরাপিতে কি ঔষধ সেবন করা হয় :-
কেমোথেরাপির ওষুধ এবং একটি স্টেরয়েড ওষুধ: সাইক্লোফসফামাইড, ডক্সোরুবিসিন (হাইড্রক্সিডাউনোরুবিসিনও বলা হয়), ভিনক্রিস্টিন (অনকোভিনও বলা হয়) এবং প্রেডনিসোন (স্টেরয়েড ওষুধ)
ডক্সোরুবিসিন খেলে কি চুল পড়ে:-
এটি ক্যান্সার রোগের একটি ঔষধ ।ডক্সোরুবিসিনের প্রথম ডোজের ৩-৪ সপ্তাহ পরে শুরু হয়, যদিও এটি আগে ঘটতে পারে। আপনার সমস্ত চুল পড়ে যেতে পারে । এছাড়াও আপনার চোখের দোররা, ভ্রু এবং শরীরের অন্যান্য চুল পাতলা হয়ে যাওয়া এবং ক্ষতি হতে পারে। চুল পড়া অস্থায়ী এবং চিকিৎসা শেষ হলে আপনার সমস্ত চুল আবার গজাবে।
কেমোথেরাপির কতদিন পর ডায়রিয়া হয়:-
চিকিৎসা প্রধানের মাঝে অথবা শেষের দিক থেকে।কেমোথেরাপি দেওয়ার পরে ডায়রিয়া হতে পারে। কারণ সাইটোটক্সিক নামক কিছু বিষাক্ত ঔষধ ব্যবহার এর ফলে শরীরের ডিহাইড্রেশন এবং ডায়রিয়াজনিত রোগ দেখা দেয়। তবে চিকিৎসা প্রদানের ফলে সুস্থতা আরোগ্য লাভ করে।
উপসংহার :ক্যান্সার রোগ আমাদের সমাজে বেড়েই চলছে।এটি নির্মূলের খুব সাধারন ওষুধ নেই। তবে আমরা যদি প্রথম থেকেই এই চিকিৎসা নিতে পারি আমরা সুস্থতা আরোগ্য লাভ করার আশা করতে পারি নয়তোবা আমাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক মৃত্যু।
তথ্য সমুহ : বিভিন্ন চিকিৎসক এবং ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করা হয়ে।
Comments
Post a Comment